চট্টগ্রামের রাউজানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খুনের উৎসবে মেতেছে দুর্বৃত্তরা। ৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একের পর এক রাজনৈতিক কর্মী খুন হয়ে চলেছে রাউজানে। নিহতদের বেশিরভাগ বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মী বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ আজ ৬ জুলাই (রবিবার) রাউজানের কদলপুরে দিনেদুপুরে স্ত্রী কন্যার সামনে বোরকা পরিহিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি করে এক যুবদল কর্মীকে খুন করেছে।
৬ জুলাই (রবিবার) বেলা ১২ টায় উপজেলার কলদপুর ইউনিয়ন ঈশান ভট্টের হাটে শান্তি ফার্মেসীর সম্মুখে হাফেজ বজলুর রহমান সড়কের উপর এই ঘটনাটি ঘটে।
নিহত সেলিম একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সমশের পাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সেলিম বাজারের এক দোকানের সামনে বসে ছিলেন। এ সময় বোরকা পরা অবস্থায় ৫-৬ জনের একটি সশস্ত্র দল একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই সেলিম নিহত হন। হামলাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার পুজা মল্লিক সিটিজিপোষ্টকে বলেন, “রোগীটিকে সাড়ে বারোটার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমি উনাকে পরীক্ষা করে দেখি, কোনো চিহ্নই পাইনি যা নির্দেশ করে যে তিনি তখন জীবিত ছিলেন। রোগীর চোখ সম্পূর্ণ ডায়লেটেড ছিল, পালস ছিল না, রক্তচাপ (প্রেশার) ছিল না, নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন না—কোনো সাইন অব লাইফ ছিল না। রোগীর শরীরে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। একটি গুলি লাগে কোমরের ডান পাশে এবং আরেকটি মুখের ডান পাশের অংশে, যেখানে পুরো অংশটাই “এভালশন ইনজুরি”-তে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।”
নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। সেখানে নিহতের স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিটিজিপোষ্টকে বলেন, “জানাযা শেষে বাড়ি ফেরার সময় পথে দাঁড়িয়ে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনেছি। তারপর মোটরসাইকেলে ওঠা মাত্র সিএনজি থেকে ৪/৫ জন যুবক নেমে আমার স্বামীর মাথায় গুলি করে। তারপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের চেহারা আমি চিনি কিন্তু নাম জানিনা। আমি তাদের শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত সেলিম ছিলেন একজন খেটে খাওয়া মানুষ। এক সময় বালু তোলা শ্রমিকের পাশাপাশি পাহাড় হতে লাকড়ি কেটে এনে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আওয়ামী লীগের শেষের দিকে এসে যুবলীগের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে স্থানীয় যুবদলের ছত্রছায়ায় যুবদলের সাথে যুক্ত হয়ে পাহাড় কাটা, কৃষিজমি ভরাট, বালুর ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। এসব নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়। তিনি ছিলেন কদলপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জানে আলম প্রকাশ আলমের সহযোগী।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রতিবেদককে জানান, “এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রায়হান গ্রুপ ও জানে আলম গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এই দ্বন্দ্বের কারণে মো. সেলিম খুন হয়। সেলিম জানে আলম গ্রুপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।”
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের রাউজানে গত বছরের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক সহিংসতায় ইতোমধ্যে ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যার মধ্যে ১০টি সরাসরি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত। বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
৬ জুলাই, ২০২৫
প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে চট্টগ্রামে শিয়া সম্প্রদায় এক বিশাল মার্সিয়া মিছিল (তাজিয়া মিছিল) বের করেছে। রোববার (৬ জুলাই) সকালে নগরীর সদরঘাটের ইমামবাড়া থেকে শুরু হওয়া এই শোকমিছিল 'হায় হোসাইন, হায় হোসাইন' ধ্বনিতে চারদিকে এক শোকাবহ আবহের সৃষ্টি করে। শত শত শোকাতুর মুসল্লি মার্সিয়া ও শোকগীতি পাঠ করতে করতে মাতম করে মিছিলে অংশ নেন।মার্সিয়া ...
৬ জুলাই, ২০২৫
৬ জুলাই, ২০২৫
৬ জুলাই, ২০২৫
৫ জুলাই, ২০২৫
৫ জুলাই, ২০২৫
৬ জুলাই, ২০২৫
প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে চট্টগ্রামে শিয়া সম্প্রদায় এক বিশাল মার্সিয়া মিছিল (তাজিয়া মিছিল) বের করেছে। রোববার (৬ জুলাই) সকালে নগরীর সদরঘাটের ইমামবাড়া থেকে শুরু হওয়া এই শোকমিছিল 'হায় হোসাইন, হায় হোসাইন' ধ্বনিতে চারদিকে এক শোকাবহ আবহের ...