নগরের কাট্টলী, খুলশী, আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চকবাজার ও মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সকাল ৭টার পর থেকেই গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে, এবং সকাল ৯টার মধ্যে অনেক এলাকায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী ফাতেমা বেগম বলেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চুলায় গ্যাস নেই। বাচ্চাদের টিফিন দেওয়া গেল না, দুপুরেও কিছু রান্না করা সম্ভব না। বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনছি। কোনো নোটিশ ছাড়া এইভাবে গ্যাস বন্ধ করার মানে কী?”

উত্তর কাট্টলী এলাকার বাসিন্দা মো. রহমান বলেন, “গ্যাস না থাকায় নাস্তা করা গেল না। বাইরে গিয়ে রুটি-ভাজি কিনেছি। দুপুরে যদি আবার ভাত কিনতে হয়, ৭০০-১০০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়ে যাবে।”

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) জানায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল থেকেও সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।

কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, “চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ১৯০-২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি তৈরি হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে দুপুর ১টার মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”

ভোক্তারা বলছেন, গ্যাস সরবরাহে এমন বিঘ্ন ঘটলে আগাম বার্তা ও বিকল্প ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অফিসগামী মানুষদের জন্য এটি বিরাট ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বলছেন, শহরের দৈনন্দিন জীবন গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল—এত বড় এলাকা একসঙ্গে বিপর্যস্ত হওয়া নজিরবিহীন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিপূর্ণ।

উল্লেখ্য, দেশে গ্যাস সরবরাহের বড় একটি অংশ এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে আসে, যা আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। বৈরী আবহাওয়ায় টার্মিনালে ডকিং সমস্যার কারণে প্রায়শই এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।