জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অভিযোগে দলের দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
১০ জুন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জোবাইরুল আলম মানিক বলেন,
“আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছি। শেখ হাসিনার মতো ১৬ বছরের একজন মাফিয়াকে হটাতে পেরেছি। এখন যদি কেউ আবার মাফিয়া হতে চায়, তাকে বলব—বাংলাদেশে এখন যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই বড় মাফিয়া।”
এই বক্তব্যকে কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী ও শৃঙ্খলাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ফলে কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ১০ জুন একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
এর একদিন আগে, ৯ জুন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সমন্বয় কমিটির জন্য নিজ স্বাক্ষরে একটি ‘সার্চ কমিটি’ গঠন করেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) জোবাইরুল হাসান আরিফ। কিন্তু কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পর্ষদ জানায়, এ ধরনের কমিটি গঠনের কোনো কেন্দ্রীয় অনুমোদন ছিল না এবং তার পদ থেকে এমন কমিটি গঠন করার এখতিয়ারও নেই।
ফলে জোবাইরুল হাসান আরিফের গঠিত সার্চ কমিটিকে “অবৈধ ও সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত” ঘোষণা করে বাতিল করা হয়। তাকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে, অন্যথায় তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দলটির অভ্যন্তরে নেতৃত্ব, নিয়ন্ত্রণ এবং সাংগঠনিক গতিপ্রকৃতি নিয়ে মতবিরোধ তীব্র হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতৃত্বের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
দলের অভ্যন্তরে চলমান এই অস্থিরতা ভবিষ্যতে এনসিপির সাংগঠনিক ঐক্য ও জনসম্পৃক্ততার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।