২৮ মে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা চালায় সদ্য গঠিত একটি সংগঠন— ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’। সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্য জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন আকাশ চৌধুরীও।

একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, আকাশ চৌধুরী পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতেই ছাত্রজোটের কর্মীদের পেছনে গিয়ে একটি নারীর পিঠে লাথি মারেন। পরে ঘুরে এসে আরও এক নারীকে লাথি মারতে দেখা যায় তাকে। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ফেসবুকে আকাশ লেখেন, “আমি গিয়েছিলাম একজন মুসলমান হিসেবে ঈমানী দায়িত্ব থেকে শাহবাগী, বাম, ইসকন, ইসলামবিদ্বেষীদের প্রতিহত করতে। যারা সেদিন মিছিল করছিল তাদের অধিকাংশই ইসকনের সদস্য। তারা আমার পেছনে অনেকদিন ধরেই লেগে আছে।”

তিনি দাবি করেন, “আমাকে কয়েকজন নারী টেনে ধরে, গায়ে হাত তোলে এবং আমার মৃত মাকে নিয়ে অকথ্য গালাগালি করে। আমি এই অপমান মেনে নিতে পারিনি। আত্মরক্ষার্থে ওদের প্রতিহত করেছি।”

আকাশ আরও বলেন, “মিডিয়ায় ভিডিওটা এমনভাবে দেখানো হয়েছে যেন আমি বিনা কারণে নারীকে লাথি মারছি। কিন্তু আমাকে প্রথমে তারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে, সেটি কেউ দেখাচ্ছে না।”

মানবাধিকারকর্মী লুৎফর রহমান বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে নারীর ওপর সহিংসতা কোনোভাবেই বৈধতা পেতে পারে না। আইন সবার জন্য সমান— এটা প্রমাণ করতে হবে।”

গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট জানিয়েছে, এই ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে আগামীকাল (২ জুন) দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। সংগঠনের নেতারা আকাশ চৌধুরীর দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ধর্মীয় লেবাসে সহিংসতা ঢাকার প্রবণতা আমাদের সমাজে এক ভয়ংকর বার্তা দেয়। আইনের শাসন যদি এদের নাগালের বাইরে থাকে, তবে ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশ আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।