নগরে জমে উঠেছে ‘অস্থায়ী মাংসের হাট’ — দরিদ্রের বিক্রি, নিম্ন মধ্যবিত্তের ভরসা

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ৮/৬/২০২৫, ১০:৪৭:৪২ AM

নগরে জমে উঠেছে ‘অস্থায়ী মাংসের হাট’ — দরিদ্রের বিক্রি, নিম্ন মধ্যবিত্তের ভরসা

পবিত্র ঈদুল আযহার প্রধান অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। এই উৎসবে ত্যাগের মহিমায় অনেকেই পশু কোরবানি দিলেও সমাজের এক বিশাল অংশ—নিম্ন আয়ের মানুষ—সামর্থ্য না থাকায় কোরবানি দিতে পারেন না। তবে, কোরবানিদাতাদের অনুগ্রহে কিংবা কাজের বিনিময়ে তারা কিছু মাংস পেয়ে থাকেন।


কেউ সেই মাংস নিয়ে যান পরিবার পরিজনের জন্য, আবার কেউ কেউ বিক্রি করে দেন নগদ টাকার প্রয়োজনে। আর এভাবেই চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঈদের দিনে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী মাংসের হাট।

শনিবার (ঈদের দিন) দুপুরের পর থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার, দুই নম্বর গেট, অক্সিজেন, কাজীর দেউড়ি, টাইগার পাস, দেওয়ান হাট, আগ্রাবাদ ও আন্দরকিল্লা এলাকাসহ প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দেখা গেছে এই মাংসের অস্থায়ী কেনাবেচা। এর মধ্যে বহদ্দারহাট, চকবাজার ও আন্দরকিল্লা ছিল সবচেয়ে জমজমাট।

সালাউদ্দিন, বহদ্দারহাটে মাংস বিক্রি করতে এসেছেন। বললেন, “সকালে কসাইয়ের কাজ করছিলাম শমসের পাড়ায়। মজুরি ছাড়াও কিছু মাংস পাইছি। বাসায় ফ্রিজ নাই, এত মাংস রাখব কোথায়? তাই বিক্রি করতে আইছি।”

জোৎসা আরা, কাজীর দেউড়িতে বসে মাংস বিক্রি করছিলেন। বললেন, “বছরের বাকি সময় মসল্লা বাটার কাজ করি। আজও একটা বাড়িতে কাজ করছিলাম। ওই বাড়ির আপা আমাকে হাড্ডিসহ দুই কেজি দিছে। আরও কয়েক জায়গা থেকেও পাইছি। অল্প কিছু রেখে বাকিটা বিক্রি কইরা দিব।”

 

মো. সোলায়মান, একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত ভোক্তা। জানালেন, “আগে কয়েকজনে মিলে কোরবানি দিতাম। এখন সামর্থ নাই। তাই এখান থেকে প্রায় সাড়ে চার কেজি মাংস কিনে নিছি।”

 

আব্দুল জব্বার, অক্সিজেন এলাকার ছোট হোটেল মালিক, বললেন, “প্রতি বছর এই সময় মাংস কিনি। ফ্রিজে রেখে পরের কয়েক সপ্তাহ হোটেলে ব্যবহার করি। এখানে কেজি ৫০০ টাকার মতো পড়ে, বাজারের চেয়ে কম।”

এই অস্থায়ী হাটগুলো সমাজের দুই বিপরীত শ্রেণির মাঝে এক অনন্য বিনিময়ের ক্ষেত্র।


একদিকে, অতিরিক্ত পাওয়া মাংসকে অর্থে রূপান্তর করছেন দরিদ্ররা, অন্যদিকে, সামর্থ্যহীন নিম্ন মধ্যবিত্তরা পরিবারের জন্য মাংস সংগ্রহ করছেন অল্প দামে।

তবে, এসব লেনদেনে স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং নিয়ন্ত্রণহীন বিক্রি নিয়ে প্রশাসন ও জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট।

কোরবানির আনন্দের এই অস্থায়ী হাটগুলো সমাজের অসাম্যকে যেমন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, তেমনি সহাবস্থানের এক বাস্তব ছবিও তুলে ধরে। তবে, এ চিত্র যেন শুধু বেচাকেনায় সীমাবদ্ধ না থেকে নিরাপদ খাদ্য ও সামাজিক সমবন্টনের দিকে এগোয়—সেই প্রত্যাশাই সবার।

ক্যাটাগরি:
কভার নিউজচট্টগ্রাম

কভার নিউজ ক্যাটাগরি থেকে আরো

খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি?

খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি?

১ জুলাই, ২০২৫

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। তবে এখনো রাষ্ট্রপতির পদে বহাল আছেন তার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। এই প্রেক্ষাপটে বর্তমান রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও নতুন নেতৃত্ব নিয়ে সরব হয়েছেন জনপ্র...