রোববার (১ জুন) নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “এই মনোরেল শুধু যানজট নিরসনের একটি সমাধান নয়, বরং চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশবান্ধব, পর্যটন ও বাণিজ্যিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার দিকে এক বিশাল পদক্ষেপ।”

প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মনোরেল প্রকল্পে মিসরভিত্তিক দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান—ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস—প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

এই বিনিয়োগ সম্পূর্ণভাবে ওই দুটি কোম্পানিই বহন করবে বলে জানানো হয়। চসিক প্রকল্পে ভূমি বরাদ্দ ও লজিস্টিক সহায়তা দেবে। প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) মডেলে বাস্তবায়িত হবে।

মেয়র বলেন, “চট্টগ্রামকে আমরা ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ কাঠামোয় নিয়ে যেতে চাই। পর্যটন নগরী হিসেবে শহরের অপরিসীম সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মনোরেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও বলেন, নগরীর যানজট নিরসনে স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম, নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণ ও অন্যান্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে মনোরেল প্রকল্প তাৎপর্যপূর্ণ ও টেকসই সমাধান দিতে পারে।

তিনটি প্রস্তাবিত মনোরেল রুট

📍 লাইন–১ (২৬.৫ কিমি): কালুরঘাট → বিমানবন্দর
(বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট, পতেঙ্গা)

📍 লাইন–২ (১৩.৫ কিমি): সিটি গেট → শহীদ বাশিরুজ্জামান স্কয়ার
(এ.কে. খান, নিমতলী, সদরঘাট, ফিরিঙ্গি বাজার)

📍 লাইন–৩ (১৪.৫ কিমি): অক্সিজেন → ফিরিঙ্গি বাজার
(মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালি)

প্রকল্পটির আর্থিক ও কারিগরি কাঠামো তুলে ধরে আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ কাউসার আলম চৌধুরী জানান, “নাস ইনভেস্টমেন্ট ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইজিপ্ট বিনিয়োগ করবে। রাজস্ব শুধু টিকিট বিক্রি নয়, বরং স্টেশনভিত্তিক দোকান, বিজ্ঞাপন, এবং আশপাশের জমির মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমেও অর্জিত হবে।”

তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী গণপরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিতে ৫–৭ গুণ রিটার্ন দিতে পারে।

গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “স্মার্ট ও টেকসই নগরীর লক্ষ্যে মনোরেল একটি মাইলফলক। নাগরিকদের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা নিশ্চিত করে আমরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে পাশে থাকব।”

অনুষ্ঠানে মেয়র শাহাদাত কক্সবাজারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, “নদী ও পাহাড়ঘেরা এই শহরকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে উন্নত বিমানবন্দর অপরিহার্য” ।

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, ফোরামের সদস্য সচিব নাজির শাহীন, ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিরা।