মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, তার স্বপ্ন—চট্টগ্রামকে একটি "গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি সিটি" হিসেবে গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যে নাগরিকদের প্রত্যাশা ও চাহিদা পূরণে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন, অবকাঠামো উন্নয়ন, নাগরিক সেবার মান বাড়ানো ও পরিকল্পিত নগরায়নে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকবে বাজেটে। বিশেষ করে সিডিএ’র মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১টি খাল পুনরুদ্ধারে নতুন প্রকল্প নেয়া হবে এবং একটি ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু হবে।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, বাজেটে বরাদ্দ থাকবে সড়ক নির্মাণ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য বাসস্থান নির্মাণের মতো প্রকল্পগুলোর জন্য। চলমান চারটি বড় প্রকল্প বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব পাবে। সেগুলো হলো— বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস নির্মাণ, বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। পাশাপাশি শহরের ১০০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সংগ্রহে নতুন প্রকল্পের বরাদ্দও থাকবে।

নগরবাসী বলছেন, নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা ৭৫টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাজেটে কীভাবে বরাদ্দ রাখা হয়, তা এবার তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। অনেকে আশা করছেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কর আদায়ের সুযোগ থাকায় মেয়র জনগণের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপাবেন না।

আইন অনুযায়ী, কর্পোরেশনের বাজেট পহেলা জুনের আগেই অনুমোদন করে সরকারের কাছে পাঠাতে হয়। চসিকের ষষ্ঠ পরিষদের প্রথম সভা হয়েছিল ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, ফলে মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এই হিসেব অনুযায়ী, এটি মেয়র ডা. শাহাদাতের একমাত্র পূর্ণ বাজেট হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন এবং মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে ডা. শাহাদাত নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ এনে মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর আদালত তার পক্ষে রায় দেন এবং তাকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ৩ নভেম্বর তিনি শপথ নেন।

এই বাজেট শুধুমাত্র একটি আর্থিক পরিকল্পনা নয়—এটি ডা. শাহাদাত হোসেনের স্বপ্ন, প্রতিশ্রুতি ও নেতৃত্বের পরীক্ষার দলিল। চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে এই বাজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।