মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা শিশু শহীদ আছিয়ার গায়েবানা জানাজা বৃহস্পতিবার রাত ১০:৩০ মিনিটে চট্টগ্রামের বিপ্লব উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড) এর উদ্যোগে আয়োজিত এই জানাজায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজার আগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা দেশের বিচারহীন সংস্কৃতি এবং নারী ও শিশুদের নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড), চট্টগ্রাম দক্ষিণের আহ্বায়ক খোবাইব হামদান বলেন, “ধর্ষণের বিচারহীনতা দুর্বৃত্তদের সাহস জোগাচ্ছে। আমরা প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জুবায়রুল হাসান আরিফ বলেন, “আমাদের এমন একটি বাংলাদেশ দরকার যেখানে আমাদের আর কোনো বোনের জন্য এভাবে রাস্তায় নামতে না হয়। ধর্ষকদের মনে ভয় তৈরি করাই হবে আমাদের কাজ।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক তৌসিফ ইমরোজ বলেন, “জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে, ঠিক সেভাবেই ধর্ষকদেরও এই দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে।”
স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড)-এর আহ্বায়ক মো. জামির উদ্দিন বলেন, “হাসিনার আমলে বহু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, বিচার হয়নি। এখনো যদি এসব অপরাধ চলতে থাকে, তাহলে আমরা আবারও রাস্তায় নামবো।”
স্টুডেন্টস এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড)-এর সদস্য সচিব আবির বিন জাবেদ বলেন, “আজ আছিয়া আমাদের ছেড়ে গেছে। যদি তার ধর্ষকদের বিচার না হয়, তবে এটি শুধু একটি শিশুর মৃত্যু নয়, বরং আমাদের বিচার ব্যবস্থারই মৃত্যু।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ বলেন, “এই বাংলাদেশে কোনো ধর্ষকের ঠাঁই হবে না। সবাইকে আহ্বান জানাই, দেশের প্রতিটি এলাকায় ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলুন।”
গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন জুলাই’২৪ আন্দোলনের শহীদ মাসুমের ভাই মাহি।
জানাজার পর উপস্থিত জনতা বিভিন্ন স্লোগান দেন:
“ইনকিলাব! ইনকিলাব! জিন্দাবাদ! জিন্দাবাদ!”
“ইন্টেরিম! ইন্টেরিম! তোমার ঘরে কাহার ডিম?”
“শোক নয়, বিচার চাই! সবার নিরাপত্তা চাই!”
“শিশু, পুরুষ এবং নারী—বাংলাদেশই সবার বাড়ি!”
“তনু, মুনিয়া, আছিয়া—বিচার দাও যাচিয়া!”
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে তারা দেশব্যাপী আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন।