মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বার্তায় খামেনি লেখেন, “মহান হায়দারের নামে যুদ্ধ শুরু হচ্ছে।” এই ‘হায়দার’ নামটি ইসলামি ইতিহাসে খলিফা আলী (রা.)-এর উপাধি, যা প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্মীয় যুদ্ধ ও ন্যায়ের প্রতিশোধের।

তিনি আরও লেখেন, “আমাদের অবশ্যই সন্ত্রাসী শাসনের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা কোনো দয়া দেখাব না।”

খামেনির বিবৃতির ঠিক পরপরই মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ইসরায়েলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রকেট অ্যালার্ম বাজতে শুরু করে। প্রায় ১৫টি ব্যালিস্টিক প্রজেক্টাইল আঘাত হানে বিভিন্ন এলাকায়। এরপর রাত ১টা ২০ মিনিটে আরও ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে ধেয়ে আসে বলে জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।

বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠে তেল আবিব, হার্জলিয়া এবং হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো। আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনা।

হামলার স্থানে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো পৌঁছালেও, আকাশে আরও সম্ভাব্য আঘাতের আশঙ্কায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইডিএফ বারবার জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উত্তেজনার মূল সূত্রপাত ট্রাম্পের এক বিস্ফোরক বিবৃতি থেকে, যেখানে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যা করার সরাসরি হুমকি দেন। ট্রাম্পের কথায়, “খামেনি যদি আর এক ইঞ্চিও বাড়ায়, তাকে আমরা ইতিহাসের পাতায় ফেলে দেব।”

এর জবাবেই খামেনির এই সরাসরি ‘ধর্মীয় ও সামরিক যুদ্ধের ঘোষণাকে’ তর্জনী হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই যুদ্ধাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যেই সিরিয়া, লেবানন এবং ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধাদের মাঝে সক্রিয়তা বাড়ছে। ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলো ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।