স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) এক গোপন মধ্যস্থতা আলোচনার সঙ্গে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “কাতার ও ওমানকে ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে—ইসরায়েল যদি আগ্রাসন অব্যাহত রাখে, তাহলে তারা যুদ্ধবিরতি বা আলোচনার কোনো প্রস্তাবে সম্মত হবে না। ইরান কেবল তখনই বাস্তব আলোচনায় বসবে, যখন ইসরায়েলের হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া সম্পন্ন হবে।”

গত শুক্রবার ভোরে, ইসরায়েল আকস্মিকভাবে ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব ও পারমাণবিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

হামলার জবাবে তেহরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, “আমরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নরকের দরজা খুলে দেবো।”

এই বক্তব্যকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মধ্যপ্রাচ্যে বৃহৎ সংঘাতের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন।

কাতার ও ওমান দুই দেশই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করে চলছে। ২০২৩ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের মধ্যস্থতাও করেছিল। চলমান উত্তেজনার মধ্যেও এই দুটি দেশ ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে।

তবে, রয়টার্সের সূত্র বলছে, ইরান যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনা এখনই করতে প্রস্তুত নয়, বরং তারা নিজেদের সামরিক প্রতিক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে।

দ্য গার্ডিয়ানের খবরে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার পর ওমানের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া পারমাণবিক আলোচনা ইতোমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ইরান যুদ্ধবিরতি ও পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে কাতার ও ওমানকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনায় আনতে চাইছে। তবে রোববার ওই কর্মকর্তা স্পষ্ট জানান,

“এই তথ্য ভুল। ইরান এখন কোনো আলোচনায় নয়, প্রতিরোধে মনোযোগ দিচ্ছে।”

এই ঘটনায় এখনো ইরান, কাতার, ওমান বা ইসরায়েল—কোনো দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য নতুন এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধের এই চক্র যুক্তরাষ্ট্র, লেবানন, সিরিয়া, সৌদি আরবসহ গোটা অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে পারে।