মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের পর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বহু এলাকায় সাইরেন বেজে উঠেছে, আর জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF)।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, "উত্তরাঞ্চলে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় হয়েছে।" জনগণকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) তেল আবিবের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছে, 'নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে শহর ত্যাগ করুন।' ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো হুঁশিয়ার করে বলেছে, প্রতিশোধমূলক হামলা অব্যাহত থাকবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের সরাসরি হুমকি গত দুই দশকে নজিরবিহীন, যা দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদরায়ি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বলেন— “আগামী ঘণ্টাগুলোতে তেহরানের একটি বড় এলাকায় অভিযান চালানো হবে। আমরা আগের দিনগুলোতেও ইরানের রাজধানীর সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছি।”
তিনি আরো জানান, তেহরানের নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে জনগণকে সরে যেতে বলা হয়েছে, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শহর-ব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
দুই দেশই একে অপরের রাজধানী লক্ষ্য করে সরাসরি হুমকি ও পাল্টা হামলার বার্তা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই সংঘাত থামানো না যায়, তাহলে তা সীমিত যুদ্ধ থেকে পূর্ণমাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধ এবং এমনকি পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। “তেহরান ও তেল আবিব এখন পরস্পরের সরাসরি টার্গেট। হুমকি আর পাল্টা হুমকিতে পারমাণবিক উত্তেজনার দিকেই ধাবিত হচ্ছে গোটা অঞ্চল,” —মধ্যপ্রাচ্য পর্যবেক্ষক হামিদ আল কাবিলি (আল-জাজিরা)।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের দাবি উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে শান্তি স্থাপনের আহ্বান জানালেও অন্যদিকে ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র আঘাত পেলে প্রতিক্রিয়া হবে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর।”