ইরানের তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২২/৬/২০২৫, ১২:১২:১৯ PM

ইরানের তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

শনিবার (২১ জুন) রাতভর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। লক্ষ্যবস্তু ছিল ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা—যেখানে ইরান দীর্ঘদিন ধরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। রবিবার (২২ জুন) সকালে এক টেলিভিশন ভাষণে এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।


ট্রাম্প বলেন, "হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানে এমন বড় হামলা হবে, যা গত আট দিনে তারা দেখেনি।" তিনি আরও সতর্ক করেন, “ইরান যদি পাল্টা হামলা করে, তাহলে তার জবাব হবে আরও শক্তিশালী।”

হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, ট্রাম্প সিচুয়েশন রুমে বসে ইরানে হামলার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করছেন। পাশে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

এই হামলায় ব্যবহৃত হয় বি-টু স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান, যা বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক গোপন হামলাযানগুলোর একটি। নিক্ষিপ্ত হয় জিবিইউ-৫৭ "মাদার অফ অল বোম্বস", যার প্রতিটি বোমার ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড এবং তা মাটির ৬০ মিটার গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম।

হামলার প্রশংসা করে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার বলেন, “ট্রাম্প ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখেছেন।” অপরদিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এই হামলাকে ‘নির্লজ্জ আগ্রাসন’ ও ‘আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি’ আখ্যা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও এই হামলা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এবং রজার উইকার ট্রাম্পের পদক্ষেপকে "সাহসী ও সঠিক" বলে সমর্থন জানান। তবে ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান সারা জ্যাকবস একে “অতিরিক্ত উত্তেজনাকর” এবং “যুদ্ধের দিকেই ঠেলে নেওয়া” পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন।

ডেমোক্র্যাট টমাস ম্যাসি এ হামলাকে ‘অসাংবিধানিক’ দাবি করে বলেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কংগ্রেসের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল।”

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তা হলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, সারা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।”

এই হামলার পেছনে মূলত ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক টানাপোড়েনকে কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—এই আঘাত কি কেবল পরমাণু কর্মসূচি থামাতে, নাকি বড় কোনো ভূরাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের অংশ?

বর্তমানে ইরানের অভ্যন্তরে উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে এবং দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাব পরবর্তী দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গভীর ছাপ ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ক্যাটাগরি:
কভার নিউজআন্তর্জাতিক

কভার নিউজ ক্যাটাগরি থেকে আরো

চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনে প্রত্যক্ষ হামলাকারী গ্রেফতার: আটক ৬

চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনে প্রত্যক্ষ হামলাকারী গ্রেফতার: আটক ৬

২৩ জুন, ২০২৫

আজ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন ২নং গেইট থেকে জিইসি পর্যন্ত একটি ঝটিকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এই মিছিলের পরপরই পুলিশ তৎপর হয়ে মাদক, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে...