জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-তে যোগ দেওয়ায় কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের তিন নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন—ইটনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির শ্যামল, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান সোহেল ও ইটনা উপজেলা যুবলীগের সদস্য বাছেত আহমেদ।
রোববার রাতে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল ও মো. রুহুল আমিন খানের যৌথ স্বাক্ষরে এই বহিষ্কারপত্র জারি করা হয়। নোটিশে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তারা এনসিপির ইটনা উপজেলা কমিটিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছেন এবং দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। বিশেষভাবে গোলাম কবির শ্যামল সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় এনসিপির পথসভায় প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিয়েছেন—যা যুবলীগের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
বহিষ্কারের আদেশে এনসিপিকে “জুলাই সন্ত্রাসীদের দল” আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, এই তিন নেতা "খুনিদের সঙ্গে ঐক্য" প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে গঠনতন্ত্রের ২২(ক) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কারের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোটিশটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীরা ফেসবুকে নোটিশটি ছড়িয়ে দেন। এনসিপির দেশব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে গত শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জের তিন রাস্তার মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় শ্যামলের বক্তৃতার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়—যার পরই এ নিয়ে দলীয় মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে গোলাম কবির শ্যামলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অপর বহিষ্কৃত নেতা কামরুজ্জামান সোহেল ফোন ধরেননি। তবে বাছেত আহমেদ (আসল নাম মো. বাছেদ মিয়া) স্বীকার করেন, তিনি আগে থেকেই যুবলীগে নিষ্ক্রিয় ছিলেন এবং মূল্যায়ন না পাওয়ায় পদত্যাগ করেছিলেন।
ইটনা উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মো. নাজমুল ঠাকুর জানান, “গোলাম কবির শ্যামল ২০১৮ সালেই যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাকে নতুন করে বহিষ্কার প্রহসনের শামিল।” তিনি আরও দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এই নাটক সাজিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর স্বাক্ষরে ২১ সদস্যবিশিষ্ট ইটনা উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে শ্যামল, সোহেল ও বাছেদকে যথাক্রমে ২, ৪ ও ১১ নম্বর সদস্য করা হয়েছে।
বহিষ্কার বিষয়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়কসহ অন্য নেতাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।