রাঙ্গুনিয়ায় অপহরণের ৮ দিন পর পোলট্রি ব্যবসায়ী মামুনের দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৩

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৫/৭/২০২৫, ৫:৩৬:৫০ PM

রাঙ্গুনিয়ায় অপহরণের ৮ দিন পর পোলট্রি ব্যবসায়ী মামুনের দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৩

রাঙ্গুনিয়ার সীমান্তবর্তী রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার দুর্গম মাঝের পাড়া এলাকা থেকে অপহরণের ৮ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুন মাঝির (৩৮) বস্তাবন্দী লাশ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কাউখালী থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার মরদেহ উদ্ধার করে।


এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মো. কামরুল (২৮) ও তার স্ত্রী রিয়া আক্তার সাথী (২১) কে লক্ষীপুর জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে স্থানীয়রা সন্দেহভাজন মো. আনোয়ার (২৫) নামে একজনকে ধরে পুলিশে দিলে তার দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মূল পরিকল্পনাকারী কামরুলের নাম উঠে আসে।

পুলিশ জানায়, ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই মামুনকে হত্যা করা হয়। প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ছিল মামুনের পূর্বপরিচিত এবং কর্মচারী। রাণীরহাট এলাকায় তার ভাড়া বাসায় মামুনকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তার মরদেহ একটি বস্তায় ভরে কাউখালীর দুর্গম নাইল্যাছড়ির মাঝের পাড়ায় পুঁতে রাখা হয়।

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, “গ্রেপ্তার কামরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সে বিভিন্ন কিলিং মুভি দেখে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করি এবং তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী লাশ উদ্ধার সম্ভব হয়।”

নিহতের স্ত্রী সীমা আক্তার জানান, তার স্বামী মামুন পোট্রির ব্যবসার পাশাপাশি ইটভাটার মাঝি হিসেবে কাজ করতেন। ঘাতক কামরুলও তার স্বামীর কর্মচারী হিসেবে বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন।

নিহতের স্ত্রী সীমা আক্তার জানান, তার স্বামী পোল্ট্রির ব্যবসার পাশাপাশি ইটভাটার মাঝি হিসেবে কাজ করতেন।ঘাতক কামরুলও তার স্বামীর কর্মচারী হিসেবে বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন। গত ৭ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে মামুন ঘর থেকে বের হন এবং রাত ৯টার দিকে তাকে ফোন করে দুটি চেক রাণীরহাট বাজারে পাঠাতে বলেন। ওই দুটি চেক মামুনের বাবা আলী আহম্মদের কাছ থেকে আনোয়ার নামের এক ব্যক্তি সংগ্রহ করেন। এরপর থেকেই মামুন নিখোঁজ ছিলেন। পরবর্তীতে মামুনের ফোন থেকে তার স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। স্থানীয়রা সন্দেহভাজন আনোয়ারকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলে তদন্তের অগ্রগতি হয়।

নিহত মামুন ছিলেন পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। স্ত্রী, বৃদ্ধ পিতা-মাতা ও তিন শিশুসন্তান নিয়ে ছিল তার সংসার। মামুনের এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়দের মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও বিরাজ করছে। তারা ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

পরবর্তীতে কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, মামুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

এই নির্মম হত্যাকাণ্ড রাঙ্গুনিয়া ও কাউখালী অঞ্চলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।

ক্যাটাগরি:
কভার নিউজচট্টগ্রাম

কভার নিউজ ক্যাটাগরি থেকে আরো

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

১৬ জুলাই, ২০২৫

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড: মোহাম্মদ ইউনূস ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রদান করে। এতে বলা হয়, আজ গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতা সম্পূর্ণ অমার্জনীয়। তরুণ নাগরিকদের একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আয়োজন করে এবং তাদের ...