হাটহাজারীতে ইসকন নিষিদ্ধের দাবীতে হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

হাটহাজারীতে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর হাটহাজারী ডাকবাংলো চত্বরে হেফাজতের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, ইসকনকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে তিনি অভিযোগ করেন, সংগঠনটি ভারতীয় স্বার্থে দেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তৎপর। তিনি দাবি করেন, টঙ্গীর বিটিসিএল টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিবুল্লাহ মিয়াজী জুমার খুতবায় সত্যোচ্চারণ করায় তাকে হুমকি দেয়ার পর গাজীপুর থেকে গুম করা হয়। পরে তাকে সীমান্তবর্তী পঞ্চগড়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মাওলানা নিজামপুরী বলেন, “আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করছি।” তিনি অভিযোগ করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো অপরাধের ঘটনায় সরকার নীরব থাকে, অথচ মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের সময় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, গেলো বছরের নভেম্বরে ভারতীয় নাগরিক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ। ২০২১ সালের জুনে চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘ নামের একটি সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে জমি দখল ও নাশকতার অভিযোগ তোলে। তার দাবি, ইসকন দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি কায়দায় স্থাপনা গড়ে তুলেছে এবং প্রশাসনের কিছু অংশের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথি হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব শায়খুল হাদীস মাওলানা জাফর আহমদ বলেন, গেলো বছরে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তার অনুসারীরা এরপর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের মুসলমানদের ধৈর্যকে ইসকন দুর্বলতা ভেবেছে, তাই আজ তারা একজন ইমামকে গুম করার সাহস দেখাচ্ছে।”
সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও হাটহাজারী উপজেলা সভাপতি মুফতী মুহাম্মদ আলী কাসেমী বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর ইসকন নেতা চিন্ময় দাস দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালায়। তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ভারতীয় এজেন্ট মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণের মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, “ইসকন মুসলমান ও সনাতনী উভয় সম্প্রদায়ের শত্রু। সম্প্রীতি রক্ষায় মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
সমাবেশে উপজেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার ও মাওলানা আসাদ উল্লাহ সঞ্চালনা করেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা হাফেজ আলী আকবর, মাওলানা মাহমুদ হোসাইন, মাওলানা শফিউল আলম, উপজেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা ওজাইর আহমদ হামিদি, মাওলানা হাফেজ আব্দুল মাবুদ, মোরশেদ আলম, আবু তাহের রাজিব, মাওলানা মহিউদ্দীন, হাফেজ মো. জাকারিয়া, মাওলানা জিয়াউল হক, এইচ এম শহীদ, মাওলানা আমিনুল ইসলাম ও মাওলানা ওবাইদুর রহমান প্রমুখ।
সিটিজিপোস্ট/এমএইচডি



.png&w=3840&q=75)
