চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শতভাগ আবাসনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী।
দুপুর সাড়ে একটা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শতভাগ আবাসনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আন্দোলনের এক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানান যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবিলম্বে শতভাগ আবাসনের ব্যবস্থা করবে নয়তো প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে। আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকট নিরসনের জন্য ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দফাগুলো নিচে দেওয়া হলো।
১. শতভাগ আবাসন নিশ্চিতকরণ:
শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন হল নির্মাণের কাজ দৃশ্যমান করে শতভাগ আবাসনের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হবে।
২. আবাসন ভাতা প্রদান:
শতভাগ আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সকল অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে উপযুক্ত আবাসন ভাতা প্রদান বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩. সিট বরাদ্দের স্বচ্ছতা:
বিগত হল আবেদনে কাদের কীসের ভিত্তিতে সিট দেওয়া হয়েছে—তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে।
৪. অবৈধভাবে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের উচ্ছেদ:
প্রত্যেক হলে অবৈধভাবে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের তালিকা শনাক্ত করে তাদের সিট বাতিল করতে হবে এবং দ্রুত হল ছাড়তে বাধ্য করতে হবে।
৫. আবেদন ফি ফেরত:
হলের আবেদনে ১০০ টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে প্রহসন চালানো হয়েছে এবং সিট না দেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, সেই টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।
৬. মেয়েদের হলে ডাবলিং প্রথা বন্ধ:
মেয়েদের হলে ডাবলিং প্রথা বন্ধ করতে হবে এবং এর পরিবর্তে ডেকার বেড প্রথা চালু করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ আবাসনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের ৬ দফার সাথে একাত্মতা পোষণ করে স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি মুখপাত্র ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জগলুল আহমেদ সিটিজিপোস্টকে বলেন," আমরা এ আন্দোলনের সাথে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি। প্রশাসন বিগত এক বছর যাবৎই এই বিষয়ে গড়িমসি করছে"। বিশ্ববিদ্যালয়ের তীব্র আবাসন সংকট হলের সীট বন্টন সম্পর্কে তিনি বলেন, "হলগুলোতে প্রচন্ড আবাসনসংকট থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিবেচনায় সিট বন্টনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আজকে প্রশাসনকে প্রশ্ন করা হলে তারা শিক্ষার্থীদের জবাব না দিয়েই পালিয়ে যায় অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এবং ছাত্রদের জন্য অপমানজনক। আশা করি, এই আন্দোলন আরো জোরদার হবে।"
রাজনীতি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মাঈন উদ্দিন আরাফ বলেন, "প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ১৩% শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কি.মি.। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী শহর থেকে যাতায়াতে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হচ্ছে, অপচয় হচ্ছে মূল্যবান সময়। আমরা চাই, অনতবিলম্বে শতভাগ আবাসন নিশ্চিত হোক এবং যতদিন হল নির্মাণ না হচ্ছে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে।"
পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনীম জাহান বলেন, মেয়েদের হলে ডাবলিং সিস্টেমের কথা সবার জানা। খাট মাত্র ৩ ফিট, শুইতে হয় দুইজন। একটু হেলদি হইলে সেটাও থাকা সম্ভব না। নাইটগার্ড এর মতো শিফটিং করে করে ঘুমানোর নজির আছে এই প্রীতিলতা হলেই। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শতভাগ আবাসনের কথা বলা হয়েছে, সেখানে প্রশাসন আমাদের সাথে প্রহসন করে। হলের সিট প্রশাসনের দয়া-দাক্ষিণ্য না। হয় আমার ভাগের সিট আমাকে দিবে, অথবা আমার আবাসনের খরচ দিতে হবে।"
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৭ হাজার ৫৫০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এর মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার ৪৯৪ জন এবং মহিলা শিক্ষার্থী প্রায় ১০ হাজার ৪৬ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৩টি আবাসিক হল রয়েছে, যার মধ্যে পুরুষদের জন্য ৮টি ও মহিলাদের জন্য ৫টি। এসব হলে পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য আনুমানিক ৪ হাজার ৫০০টি এবং মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ২ হাজার ৫০০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। ফলে ২০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধার বাইরে থাকছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন। প্রতিদিন ২২ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে শাটল ট্রেনে যাতায়াত করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ক্লাস শেষে পুনরায় শহরে ফিরতে হওয়ায় তাদের শিক্ষাজীবনে শারীরিক ও মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে।
সিটিজিপোস্ট/ জে.আ.
২৪ আগস্ট, ২০২৫
ঋতুচক্রে বর্ষাকাল শেষ হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আজ রোববারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগ...
২৪ আগস্ট, ২০২৫
২৩ আগস্ট, ২০২৫
২৩ আগস্ট, ২০২৫
২৩ আগস্ট, ২০২৫
২৩ আগস্ট, ২০২৫
২৪ আগস্ট, ২০২৫
ঋতুচক্রে বর্ষাকাল শেষ হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আজ রোববারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।আবহাওয়া অধিদপ্তর জ...