চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর ছোট পুল এলাকায় একটি নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদনকে ঘিরে কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পারফে অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
সিটিজি পোস্টের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফাইল নং ১৩৪/২৪ অনুযায়ী নুরুল্লাহ গং-এর মালিকানাধীন ওই প্লটের জন্য সিডিএ ১০ তলা ভবনের অনুমোদন দেয়। তবে প্রকল্প মালিকের প্রয়োজন ছিল ১৩ তলার অনুমোদন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠান ও সিডিএ-র কিছু কর্মকর্তা।
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, পারফে অ্যাসোসিয়েট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ইউসুফ শাহ সাজু (৪৫) নিজেকে সিডিএ’র প্রকৌশলী পরিচয় দিয়ে প্রথম দফায় প্রায় ৭১ লাখ টাকা নেন।
পরে ওই অর্থের ভাগ পান সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো. হোসেন, প্রকৌশলী নোবেল মিত্র, কর্মচারী নইম উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথনের কল রেকর্ডও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
অভিযুক্তদের বক্তব্য
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউসুফ শাহ সাজু ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, “এই ঘটনায় প্রকৌশলী নোবেল মিত্র, কর্মচারী নইম উদ্দিন ও প্রধান প্রকৌশলীর পিএ হোসেন জড়িত। নইম উদ্দিন ও হোসেন বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ১৩ তলা অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে।”
কর্মচারী নইম উদ্দিন বলেন, “ঘটনাটি ২০২৪ সালের। কে কত টাকা নিয়েছে তা আমি জানি না। তবে ইউসুফ শাহ সাজু ও পিএ হোসেন বিষয়টি পরিচালনা করেছে।”
অন্যদিকে পিএ হোসেন দায় এড়িয়ে বলেন, “টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। শুধু ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করেছিলাম যাতে ১৩ তলার অনুমোদন দেওয়া হয়।”
সিডিএ কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রকল্প) মো. মাহফুজুর রহমান সিটিজি পোস্টকে বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে আমি শুনেছি। বেশ কয়েকবার আমার কাছে তদবিরও এসেছে। কে কোথায় কত টাকা নিয়েছে, তা আমি জানি না। শুধু অনুমোদন প্রক্রিয়ার পথ দেখিয়ে দিয়েছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে হালিশহর ছোট পুল জোনের অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী তানজিব হোসেন, তিনিই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, “আপনারা সংবাদ প্রস্তুত করুন, প্রমাণ আমাকে দিন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”