শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সমিরউদ্দীন স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কাউন্সিলের ভোটগ্রহণ ও গণনার পর জেলা বিএনপির নেতারা দীর্ঘ সময়েও ফলাফল ঘোষণা না করে সরে পড়তে চান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং কেন্দ্রে হট্টগোল শুরু হলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।

দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাউন্সিলের ভোটগ্রহণ চলে। গণনার সময় বাইরে অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। সন্ধ্যা ৭টার পরেও ফলাফল ঘোষণা না করায় উত্তেজনা বাড়ে। তাদের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মৌখিকভাবে জানালেও ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেননি। ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ভোটে ৪৯৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সভাপতি পদে ছাতা প্রতীকে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম ২৪৪ ভোট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু হায়াত নুরুন্নবী চেয়ার প্রতীকে ২৪০ ভোট পান। মাত্র ৪ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হলেও ফলাফল প্রকাশে বিলম্বিত আচরণে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা।

রাত ৮টার দিকে সম্মেলনের প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন ফলাফল ঘোষণা করতে কেন্দ্রে আসেন। ঘোষণার পর তিনি ফিরে যেতে চাইলে নেতাকর্মীরা তাকে ধাওয়া করেন এবং তার গাড়ি বহরে হামলা চালান। বহরের একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়। দ্রুত তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হলেও এ সময় চারজন আহত হন।

গাড়ির মালিক মো. রাশেদ বলেন, ‘আমি ফয়সাল আমিনকে সেইফ করছিলাম। এসময় প্রাইভেট কারটি ভাঙচুর করা হয়। পরে দ্রুত অন্য গাড়িতে করে চলে যান তিনি।’

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, ‘ভোটের ফলাফল ঘোষণা দিয়ে বের হওয়ার সময় মির্জা ফয়সাল আমিনের ওপর হামলার চেষ্টা চালানো হয় এবং তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে হট্টগোল তৈরি হয়। এতে কয়েকজন আহত হন এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের গাড়িবহরে হামলা হয়।’

সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে নেতাকর্মীদের "ভুয়া ভুয়া" স্লোগান দিতেও শোনা যায় জেলা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।