বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা রবিবার রাতে এক আবেগঘন ফেসবুক লাইভে অভিযোগ করেছেন যে, জুলাই মাসের গণআন্দোলন আজ “মানি মেকিং মেশিন”-এ পরিণত হয়েছে। আন্দোলনের আদর্শচ্যুতি, সমন্বয়কদের দখলদার মনোভাব এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, "আনফরচুনেটলি, সেটা এখন সত্যি হয়েছে।"
প্রায় দুই ঘণ্টার দীর্ঘ ভিডিওবার্তায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে উমামা বলেন, “আমার কারও ক্ষতি করার ইচ্ছা নেই। কিন্তু কিছু বলতে হচ্ছে, কারণ এটা আর সহ্য করা যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “আমরা যখন রাস্তায় নামি, কখনো ভাবিনি শিশুরাও জীবন দেবে। আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক হয়ে লড়েছি। সেখান থেকেই আন্দোলন বেঁচে ছিল, টিকে ছিল।” কিন্তু আন্দোলনের শক্তি এখন ‘সমন্বয়কের দখলে চলে গেছে’, বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
উমামা বলেন, ৫ আগস্টের পর তিনি ছাত্র ফেডারেশন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। নিজের ভাষায়, “আমি প্ল্যাটফর্মটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এরপর থেকেই অনেকের চোখে খারাপ হয়ে যাই।”
তিনি অভিযোগ করেন, “অনেকেই এখন আওয়ামী লীগের রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে। সমন্বয়ক পরিচয়ে একেকজন একেক জায়গা দখল করছে। কেউ কেউ তো চাঁদাবাজিও করছে।”
তাঁর মতে, আন্দোলন এখন আর তৃণমূলনির্ভর নয়; বরং নেতৃত্ব-নির্ভর ও স্বার্থান্বেষী মহলের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
উমামা বলেন, “অনেকেই আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে এখন টেন্ডার নিচ্ছে, তদবির করছে, ডিসি নিয়োগেও হাত দিচ্ছে। আমি ভাবতেই পারিনি, কেউ আন্দোলনের নামে টাকা ইনকাম করে।” তিনি দাবি করেন, এই স্বার্থান্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলেই তিনি অনেক শত্রু তৈরি করেছেন।
“আমি ভালো পরিবারের সন্তান, আমার স্কলারশিপ বা টাকার প্রয়োজন নেই। আমাকে কেউ টাকা দিয়ে কেনেনি। আমি চাই, দেশের জন্য কিছু করি।”
তিনি দাবি করেন, জেলা পর্যায়ে ঘুরে দেখেছেন, দেশের নানা প্রান্তে তরুণরা এখনো পরিবর্তন চায়। তাদের নিয়েই ভবিষ্যতে নতুন, পরিস্কার ও অংশগ্রহণমূলক গণচর্চার প্রয়োজন বলে মত দেন।