ঢাকায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাবেশে অংশ নিতে এক জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া নিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল। রেলের নির্ধারিত নিয়ম মেনেই এই বরাদ্দ দিলেও রাজনৈতিক দলগুলোর রেলভাড়া বাণিজ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
রেল সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে পিএইচটি টাইপ কোচ দিয়ে একটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। ট্রেনটিতে থাকবে শোভন চেয়ার ও শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) চেয়ারসহ মোট ১ হাজার ১২৬টি আসন।
বিশেষ ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে। একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে রাত ১টায় আবার চট্টগ্রামে ফিরবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের ট্রেন ভাড়া করতে আবেদনকারী সংগঠনকে নির্ধারিত ভাড়া ছাড়াও নন-স্টপ চার্জসহ বিভিন্ন অতিরিক্ত ফি জমা দিতে হয়। পুরো ভাড়া অগ্রিম পরিশোধের পরেই চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে টিকিট সরবরাহ করা হবে।
এরই মধ্যে পূর্বাঞ্চলের পরিচালন বিভাগ থেকে ট্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ইঞ্জিন ও ক্রু সরবরাহ এবং যাবতীয় প্রস্তুতির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, স্পেয়ার কোচ ব্যবহার করায় নিয়মিত ট্রেনের সময়সূচি কিংবা টিকিট বিক্রিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
এর আগে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ঢাকায় মহাসমাবেশের জন্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চার জোড়া ট্রেন ভাড়া নেয়। সে বার দলটির কাছ থেকে রেলওয়ে প্রায় ৩২ লাখ টাকা আয় করে।
এবার একই পথে হাঁটলো বিএনপির ছাত্রসংগঠনও।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম বলেন, “ঢাকার ছাত্র সমাবেশে সবচেয়ে সস্তা ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে রেলকে বেছে নিয়েছি। এজন্য বড় একটি ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে। অনেকেই নিজ উদ্যোগে বাস ও অন্যান্য মাধ্যমে অংশ নেবেন।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ট্রেন ভাড়া নেয়া ও সেটিকে ‘নিয়মের মধ্যে বৈধ’ বলেও প্রচার করায় প্রশ্ন তুলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, রাজনৈতিক মহলের চাপ ও প্রভাব বাড়ার কারণে রেলওয়ে এখন বাণিজ্যিক সুবিধার জন্য রাজনৈতিক ট্রেন সেবা দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ যাত্রীসেবাও।
তবে এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী পরিচালন কর্মকর্তা (যাত্রী) মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, আসন ও কোচ থাকলে যে কেউ যে কেউ নিয়ম মেনে আবেদন করলে ট্রেন বরাদ্দ পেতে পারে। রাজনৈতিক সংগঠন থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়েও ট্রেন ভাড়া দেয় রেলওয়ে। সেই প্রক্ষিতে আবেদনের ভিত্তিতে ছাত্রদলও ট্রেন বরাদ্দ পেয়েছে।
সিটিজি পোস্ট/এইচএস