” ভাই অক্সিজেন দেন, মরে যাচ্ছি ” – ডেক ক্যাডেট আবু রাশেদের করুণ প্রাণ রক্ষার আকুতি। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় নি।
গত ৩১শে মে মুম্বাই এর একটি হাসপাতালে ICU তে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সূত্রপাত ঐদিন দুপুরে। ডেকে সে মাথা ঘুরে পড়ে যায়, বমি হয় এবং বমির সাথে রক্তও আসে। এমতাবস্থায় ফ্রেশ ওয়াটার এর বোটে করে তাকে শোরে হাসপাতালে আনা হয়।
বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখে, চট্টগ্রাম হতে KSRM কোম্পানীর, Brave Royal Ship Management (SR Shipping) এর MV Jahan Moni জাহাজে সাইন অন করে। এবং মার্চ মাসের ২৯ তারিখে জাহাজে অন বোর্ড হয়। অনবোর্ড হওয়ার পর থেকেই তার কর্মঘণ্টা (ডিউটি আওয়ার) ৫.০০ টা থেকে ৮.০০ টা (সমুদ্রে), পোর্টে ৫.০০ টা থেকে ৮.০০ টা অথবা ৮.০০ টা থেকে ৮.০০ টা অথবা ৬.০০ টা থেকে ৮.০০ টা এই রকম অনির্দিষ্ট ছিল। এই সময় ছাড়াও চীফ অফিসার বিপ্লব চন্দ্র সাহ (সিডিসি নং – 0/0/4148, পাসপোর্ট নং – EF0075868) ডিউটি আওয়ারের বাইরেও যখন তখন তাকে কাজে ডেকে পাঠাত। কখনো কখনো ভোর ৩.০০ টা থেকে রাত ১১.০০ টা পর্যন্ত অনবরত তাকে ডিউটি দেওয়া লাগত। ফলস্বরূপ, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের দিকে সে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং ৩ দিন তাকে শীপে আইসোলেটেও রাখা হয়। পরবর্তীতে জ্বর সেরে গেলে এবং কিছুটা সুস্থ হলে আবারও প্রতিদিন ১৬-১৮ ঘন্টা তার ডিউটি করা লাগত। সপ্তাহ খানেক আগে থেকে তার বমি শুরু হয়, শরীর ধীরে ধীরে অনেক খারাপ হতে থাকে এবং ওজন কমতে থাকে। অনবোর্ডে তাকে কিছু এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। চীফ অফিসার বিপ্লব চন্দ্র সাহাকে অসুস্থতার বিষয়টি জানানো হলে তিনি ক্যাডেট রাশেদকে এন্টিবায়োটিক সেবন করে ডিউটিতে যেতে বলেন এবং এরপরও সেই ১৬ ঘণ্টা তাকে ডিউটি করতে হয়। অবশেষে ৩১শে মে, ২০২২ তারিখে দুপুরে সে ডেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় এবং পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়।