মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়েছে। করোনাকালে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিষণ্ণতাজনিত রোগ পাঁচ গুণ বেশি এবং উৎকণ্ঠাজনিত রোগ ১০ গুণ বেড়েছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিক সমস্যায় বেশি ভুগছেন। গবেষণায় অংশ নেওয়া পুরুষদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং আর্ক ফাউন্ডেশনের দুই বছরের পৃথক গবেষণায় এ চিত্র পাওয়া গেছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, লোকলজ্জার ভয় ঝেড়ে ফেলে প্রত্যেককে তাঁর নিজের মানসিক অবস্থা যাচাই করা প্রয়োজন।করোনাকালের শুরু থেকেই অর্থনৈতিকভাবে সংকটে পড়া বা অনিশ্চিত জীবন নিয়ে ভীত হয়ে উদ্বেগ ও বিষণ্নতায় ভোগা মানুষদের কথা বহুবার আলোচনা হয়েছে। নানান শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে এ বিষয়ে গবেষণাও হয়েছে বিস্তর। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন নতুন গবেষণা বলছে, মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা বাসা বাঁধছে নতুনভাবে। ঘুণ পোকার মতো তা ক্ষয় ধরাচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যে। এই বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থার বড় আঘাত পড়েছে বাংলাদেশেও। এক গবেষণা বলছে, করোনাকালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতায় বাংলাদেশ শীর্ষে। খোদ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরিপও বলছে, করোনা-সম্পর্কিত উদ্বেগজনিত অসুস্থতার হার সাধারণ উদ্বেগজনিত অসুস্থতার হারের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি। হাসপাতাল ঘুরে এ চিত্রের বাস্তবতা পাওয়া গেছে।
২৮ বছরের ব্যক্তিটি দুই বছর আগে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে মাস্টার্স করেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও নেন। ওই চাকরির স্থায়িত্ব ছিল কয়েক মাস। এক বছর আগে হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যান তিনি। এতই বিমর্ষ থাকতেন যে একসময় তাঁর খাওয়াদাওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় গত ২৯ ডিসেম্বর তাঁকে রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করান মা-বাবা। গত ১৯ জানুয়ারি হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ওই ব্যক্তির মা-বাবার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।